টেনিস এলবো বা কনুই ব্যথা

শক্ত করে মুঠ করে কাজ করলেই কনুই ব্যথা, একটি সাধারণ সমস্যা। মানুষ তার জীবনের কোন না কোন সময় এ ব্যথায় আক্রান্ত হন। ডাক্তারি পরিভাষায় এ রোগকে ল্যাটেরাল ইপিকন্ডালাইটিস বলে। ধারণা করা হতো, টেনিস খেলোয়াড়দের এটি বেশি হয় বলে একে টেনিস এলবো বলে।
বাহুর হাড়ের নিচের প্রান্তের বাইরের অংশকে ল্যাটারাল ইপিকোনডাইল বলে। কনুইয়ের নিচের পেছনের পেশিগুলো এ স্থান থেকে উৎপত্তি হয়। কনুই ও হাতের কবজি বারবার পেছনে বাঁকা করে কাজ করলে, ঐ স্থানে আঘাত হয়ে প্রদাহের সৃষ্টি করে এবং ব্যথা হয়। এই সমস্যাকেই ল্যাটারাল ইপিকোনডাইলাইটিস বা টেনিস এলবো বলে।
♦কাদের হয় ?
রোগটি টেনিস বল খেলার সঙ্গে নামকরণ ও সম্পর্কযুক্ত হলেও আমাদের দেশে কর্মজীবী নারী ও গৃহবধূরা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
♦কারা ঝুঁকিতে আছে ?
→হাতুড়ি ও স্ক্রু ড্রাইভার ব্যবহারকারী
→পেইন্টার বা রং মিস্ত্রি
→টাইপিস্ট, স্টেনোগ্রাফার
→সাংসারিক কাজে ব্যস্ত নারী
→যারা আতিরিক্ত হাতের কাজ করে, যেমনঃ
ধোপা, গাছ কাটা, ইট ভাঙা, ধান কাটা
ইত্যাদি।
→টেনিস ও ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়
→অত্যধিক মোটরসাইকেল চালনাকারী।
→বিভিন্ন ধরনের আর্থ্রাইটিস
যেমনঃ রিউমাটয়েড, গাউট ইত্যাদি
♦ লক্ষণ সমুহ কি কি ?
* হাত দিয়ে কিছু তুলতে কনুইয়ে ব্যথা হয়
* ভেজা কাপড় মোচড়ানো, চামচ দিয়ে কিছু
নাড়ানো কষ্টকর হয়
* এমনকি করমর্দন করতেও অসুবিধা হয়
* ব্যথা কনুই থেকে শুরু হয়ে হাতের আঙুল
পর্যন্ত যেতে পারে
* কনুইয়ের বাইরের দিকে চাপ দিলে প্রচণ্ড
ব্যথা অনুভূত হয়
♦ কিভাবে রোগ নির্ণয় করা হয় ?
– রোগের ইতিহাস জানা এবং বিশেষজ্ঞ কর্তৃক নিজ হাতে কনুইয়ের শারীরিক পরীক্ষা করা জরুরী। এর সাথে নিশ্চিতকরণ ও অন্য রোগ থেকে আলাদা করার জন্য আরও আরও কিছু পরীক্ষা প্রয়োজন। যেমনঃ
o রক্ত পরীক্ষা
o কনুইয়ের এক্স-রে
o কনুইয়ের আল্ট্রাসনোগ্রাম ইত্যাদি
 
♣করণীয়ঃ
→হাতকে বিশ্রাম দেয়া ও দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করা জরুরী
→কাজের সময় কনুইয়ের একটু নিচে “এলবো ব্যান্ড” লাগানো বেশ কার্যকরী
→গরম ভেজা সেঁক ব্যথা কমানোর ক্ষেত্রে উপকারী
→এ সময় ভারী কোনো কিছু ওঠানো বা মোচড়ানো যাবে না
→সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত অবনতিকারক কাজ পরিহার করতে হবে
♣ঔষধঃ
রোগীর সার্বিক অবস্তা বিবেচনা করে ঔষধের পরামর্শ দেয়া হয়।
যেমনঃ
ব্যথানাশক ঔষধঃ—প্যারাসিটামল, এন,এস,এ,আই,ডি ইত্যাদি।
♣ফিজিওথেরাপি:
এ রোগের চিকিৎসায় ফিজিওথেরাপি অন্যতম চিকিৎসা।
যেমনঃ
→আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি,
→শকওয়েভ থেরাপি,
→ডিপ ফ্রিকশন মেসেস থেরাপি ইত্যাদি
♣ইনজেকশন:
→কিছু ক্ষেত্রে প্রদাহের স্থানে ব্যথানাশক ইনজেকশন দেয়ারও প্রয়োজন হতে পারে।
→বর্তমানে আল্ট্রাসাউন্ড মেশিনের মাধ্যমে এই কাজটি নিখুঁত ভাবে করা যায়।
*** সম্পাদনায় ***
ডাঃ মোঃ মাহফুজুর রহমান
এমবিবিএস, এফসিপিএস
ফিজিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ
পার্কভিউ হসপিটাল প্রাঃ লিঃ, চট্টগ্রাম
চীফ কনসালটেন্ট,
খিদমাহ পেইন এন্ড প্যারালাইসিস কেয়ার
যোগাযোগঃ ০১৩১২ ৩৯ ৫৬ ৩৮
————————————————
বিস্তারিত তথ্য জানতে এই লিংকে ক্লিক করুনঃ
ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *