গাউট বা গেঁটে বাতের একটি অন্যতম কারণ হল রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের আধিক্যতা। দেহে পিউরিন নামক একটি রাসায়নিক পদার্থ ভেঙে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয়। পিউরিন মানবদেহে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয়, তবে এটি কিছু নির্দিষ্ট খাবারেও পাওয়া যায়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা হ্রাস করতে সহায়তা করে। এটি কোন নিরাময় নয়, তবে এটি গাউট আক্রমণের পুনরাবৃত্তি হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
♣স্বাভাবিক রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রাঃ
– মহিলাদেরঃ ২.৪ – ৬.০ মিলিগ্রাম পার ডিএল
– পুরুষদেরঃ ৩.৪ – ৭.০ মিলিগ্রাম পার ডিএল
♦গাউট রোগীদের খাদ্যাভাসের লক্ষঃ
-স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসের অভ্যাস অর্জন করা
-কিছু পিউরিনযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা,
তবে সব নয়
– কিছু খাবার অন্তর্ভুক্ত করা যা ইউরিক
অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে
♦যেসব খাবার খাবেন না♦
→অর্গান মিট অর্থাৎ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ জাতীয় মাংস
যেমনঃ
কলিজা, মগজ, জিহ্বা, ফুসফুস,
কিডনি, ইত্যাদি খাওয়া যাবেনা।
→লাল মাংস খাওয়া যাবে না। যেমনঃ
গরু, খাসি, ভেড়া বা
মহিষের মাংস ইত্যাদি
→সামুদ্রিক মাছ এবং শক্ত খোসাযুক্ত
প্রাণী নিষেধ। যেমনঃ
চিংড়ি, শামুক, কাকড়া ইত্যাদি
→সব রকমের ডাল, মটরশুটি, সিমের বিচি,
কাঁঠালের বিচি ইত্যাদি খাওয়া পরিহার করতে হবে।
→মধু, চিনির সিরাপ, চিনিযুক্ত পানীয়,
বিশেষ করে প্রক্রিয়াজাত ফলের জুস,
কোমল পানীয় একেবারেই খাওয়া যাবেনা।
→কিছু শাকসবজি খাওয়া যাবে না।
যেমনঃ
পালং শাক, পুঁই শাক, ব্রকোলি,
ফুলকপি,মাশরুম ইত্যাদি ।
→চিনিযুক্ত পানীয়, এলকোহোল এবং ক্যাফেন
জাতীয় পানীয় খাওয়া যাবে না।
♦যেসব খাবার খেতে পারবেন♦
→অধিক আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে। সবুজ সবজি-শাক এবং ফলমূলে প্রচুর খাদ্য আঁশ থাকে, এই আঁশ ইউরিক এসিড কে শরীর থেকে বের করে দেয়।
→চর্বিহীন মাংস খেতে হবে।এ ক্ষেত্রে মুরগির মাংস উত্তম। তবে চামড়া এবং পাখনা খাওয়া যাবেনা।
→পরিমাণ মতো মাছ এবং কুসুম ছাড়া ডিম খাওয়া যাবে।
→ফ্যাট ছাড়া দুধ বা স্কিম মিল্কও খেতে পারবেন।
→বেশি বেশি টক ফল বা ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে।
→গ্রিন টি ইউরিক এসিড কমাতে সহায়তা করে। তাই নিয়মিত গ্রিন টি পান করতে পারেন।
→চাহিদার তুলনায় বেশি পরিমাণ পানি পান করতে হবে। প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করবেন।